মেঘের ওপারে
-কবির মন্ডল
মেঘ। চারিদিক কালো মেঘ। অন্ধকার হয়ে গেছে দিনের আলো। দাউ দাউ করে আগুণ
জ্বলছে। বিবেক পুরে হয়েছে ছাই। আগুণের লোহিত শিখায় স্পর্শিত হল। আচমকা
কেপে উঠে শরীর। শেখের বেটা শেখ মুজিব উঠে দারালেন। রক্তে আগুণ জ্বলছে।
দ্রোহের আগুণ। তিনি স্থির হলেন, ভাবতে লাগলেন ঠান্ডা মস্তিস্কে। যেভাবেই
হোক আগুণ নেভাতে হবে। শত পানিতেও এ আগুণ নেভার নয়। তিনি বসলেন তার প্রিয়
হেলান চেয়ারে। হুক্কার নলটা হাতে নিলেন। মুখে পুরে একফুক টান। দেহখানী
মেলিয়ে দিলেন পুরো চেয়ারে।
ভাবছেন.. ভাবছেন...
" জন্ম আমার আজন্ম পাপ" - লেখার পরদিন লেখককে আর খুজে পাওয়া যায় নি। আপন
জন্মভুমি স্বর্গভূমি। ধন্য আমি জন্মেছি এই বাংলায়। শেখ মুজিব হুক্কার
নলটা মুখে নিলেন একফুক টান, মনের ঝির্নতা ধোয়ায় বেড়িয়ে আসে। মুজিব আরো
উজ্জিবীত হন। "না আমি নন্দনাল নাই, আমি উৎসর্গ করব প্রাণ দেশের তরে,
মানুসের অধিকারের জন্য, যোগাব মানুষের মুখের অন্ন।" তিনি বেড়িয়ে পরেন
রাস্তায়। রাজপথ খা খা করছে রৌদ্রের তেজে। যেন চারিদিক দু:খ বেদনাই চৌচির।
কে দেবে শান্তি। মুজিব আর স্থির থাকতে পারেন নি। নিজের ভাষা নিজের দেশ
নিজেকেই বাঁচাতে হবে। ফিরিয়ে দিতে হবে মানুষের অধিকার। মুজিব দাড়িয়ে নিল
আসমানের দিকে তাকালেন। আজ আর নীল নেই। রক্ত বর্ণ হয়ে গেছে। তিনি ডাক
দিলেন। মুহূর্তে ভরে গেল চারপাশ। সহস্র মানুষ হাতে হাত রাখলেন । মুজিব
বলেন, " নিজের অধিকার আদায় করতে হবে। হায়নাদের হাত থেকে দেশ মুক্ত করতে
হবে। কাকের দল দেশ থেকে বিতারিত করতে হবে।" সারা দেশে আগুন জলছে। বুকে
আগুন জলছে। বিদ্রোহের আওয়াজ। মুজিব বুঝে গেলেন ঘটনা খারাপ। তিনি
বাঙ্গালিকে বলে গেলেন-"তোমরা প্রস্তুত থাক, আমি ঘোষনা না দিতে পারলেও
তোমরা শত্রুর বুকে ঝাপিয়ে পরবা, হায়নাদের ছাড়ন নাই।"
বাঙ্গালির ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে উঠল। মুজিব স্বাধীনতার ঘোষনা দিলেন ঢাকা
বেতার কেন্দ্র থেকে। যা শুধু ঢাকায় প্রচারিত হল। কিন্তু সারাদেশের
মানুষকে জানাতে হবে। মুজিবের পক্ষে ঘোষনা পত্র লেখা হল। যা কালুরঘাট
বেতার কেন্দ্র থেকে পাঠ করলেন মেজর জিয়াওর রহমান । পুরু বাঙ্গালীর রক্তের
আগুন গুলির বেগে ঝরতে লাগল। বাঙ্গালির বুকের আগুন দেখে পাকিস্তানিদের
মাথায় আগুন ধরে গেল। আগুণ নেভাতে হবে। পানি দিয়ে এ আগুন নেভানো যাবে নাই।
মাথা চাই মুজিবের মাথা। মাথা দিয়ে এ আগুণ নেভাতে হবে। মুজিবকে ধরে নিয়ে
পাকিস্তানে আনা হল। ফাসির রায় হল। কবর খোদা হল। মুজিব দির্থ কন্ঠ বলেন..
" আমার ফাসির রায় হয়েছে। আমার কোন দু:খ নাই। আমি বাঙ্গালি আমি মুসলমান।
মুসলমান একবার মরে বারবার মরে না। মৃত্যুর পরে আমার লাশটা আমার বাঙ্গালির
হাতে তুলি দিয়।
এদিকে বাঙ্গালির আগুন নেভার দিন ঘনিয়ে আসছে। তেজের আগুণে পুরে ছাড়খার
পাকিস্তানি হায়না। মুজিবকে ফিরিয়ে আনা হল বাংলায়।নিজের ভাষা, নিজের দেশ,
নিজের ভুমি, নিজের অধিকার আজ নিজের হাতে।
শান্তি----শান্তি----পরম শান্তি---
শত কষ্টের মাঝে আজ শান্তি
দক্ষিণা বাতাশ, শিমুল গাছ, বটগাছ, তার নিচে আখরা নেড়ে বসে আছে লালন।
মুজিব লালনের পাশে বসলেন. সবুজ বন, যতদুর দৃষ্টি যায় শুধু সবুজ বন, নাদী।
টিয়া পাখির ঝাক উড়ে যায় শিমুল গাছের উপর দিয়ে। দক্ষিনা শীতল বাতাশে গা
ঠান্ডা হয়ে আসে। লালন কলকিতে টান দিয়ে মুজিব কে দিলেন। মুজিব কলকিটা মুখে
নিলেন। একটান আর এক রাশ সাধা ধোয়া। লালন গান ধরলেন
" যেদিন হিন্দু মুসলমান
বৈদ্ধ খৃষ্টান
জাতি গোত্র নাহি রবে
এমন সমাজ
কবেগ সৃজন হবে"
..........
গান থেমে গেল, চোখে পলক পরল। জানালা থেকে হাত ছাড়িয়ে তার সেই চেয়ারে বসলেন।
গ্রামের বাড়ি থেকে চাচা আসছে। মুজিবের সাথে দেখা করতে। মুজিব ব্যাস্ত।
মুজিব সেক্রেটারির হাতে ১০০০ টাকা দিলেন। বললেন ১০০০ টাকা তার চাচাকে
দিতে। তার চাচা হাতে ৫০০ টাকা। আর বাকি টাকা ভ্যানিশ হয়ে গেছে। মুজিব পরে
দেখা করলেন। দেখলেন তার চাচাকে ৫০০ টাকা দেওয়া হয়েছে।
মুজিব কিছুই বললেন না । তিনি ভাবছেন মিরজাফরের কথা ।
" হে বঙ্গমাতা
তুমি দানিয়াছ বাঙ্গালী
মানুষ করনি"।
মুজিব বিশ্বাস করেছিলেন তার বাঙ্গালি মানুষ হয়েছ। অবশেষে আর একটি মেঘের ভার...
হঠাৎ মুজিব তার ডান পাশটায় ব্যাথা অনুভব করলেন। হাত দিয়ে চেপে ধরেন।
হাতের দিকে তাকিয়ে দেখেন রক্ত ঝরছে...
না তিনি কাদেন নি। কেদেছিল ধরনী। চারিদকে মেঘের আস্তরন ক্ষনিকের নিরবাতা।
হিম শিতল। জমে আসে বুক। ধরনী হয়েছে অপার শান্ত। প্রকৃতি থাকেনি থেমে।
প্রকৃতি চলেছে তার আপন খেয়ালে নতুন সূর্যের আলো ছড়িয়ে।
-কবির মন্ডল
মেঘ। চারিদিক কালো মেঘ। অন্ধকার হয়ে গেছে দিনের আলো। দাউ দাউ করে আগুণ
জ্বলছে। বিবেক পুরে হয়েছে ছাই। আগুণের লোহিত শিখায় স্পর্শিত হল। আচমকা
কেপে উঠে শরীর। শেখের বেটা শেখ মুজিব উঠে দারালেন। রক্তে আগুণ জ্বলছে।
দ্রোহের আগুণ। তিনি স্থির হলেন, ভাবতে লাগলেন ঠান্ডা মস্তিস্কে। যেভাবেই
হোক আগুণ নেভাতে হবে। শত পানিতেও এ আগুণ নেভার নয়। তিনি বসলেন তার প্রিয়
হেলান চেয়ারে। হুক্কার নলটা হাতে নিলেন। মুখে পুরে একফুক টান। দেহখানী
মেলিয়ে দিলেন পুরো চেয়ারে।
ভাবছেন.. ভাবছেন...
" জন্ম আমার আজন্ম পাপ" - লেখার পরদিন লেখককে আর খুজে পাওয়া যায় নি। আপন
জন্মভুমি স্বর্গভূমি। ধন্য আমি জন্মেছি এই বাংলায়। শেখ মুজিব হুক্কার
নলটা মুখে নিলেন একফুক টান, মনের ঝির্নতা ধোয়ায় বেড়িয়ে আসে। মুজিব আরো
উজ্জিবীত হন। "না আমি নন্দনাল নাই, আমি উৎসর্গ করব প্রাণ দেশের তরে,
মানুসের অধিকারের জন্য, যোগাব মানুষের মুখের অন্ন।" তিনি বেড়িয়ে পরেন
রাস্তায়। রাজপথ খা খা করছে রৌদ্রের তেজে। যেন চারিদিক দু:খ বেদনাই চৌচির।
কে দেবে শান্তি। মুজিব আর স্থির থাকতে পারেন নি। নিজের ভাষা নিজের দেশ
নিজেকেই বাঁচাতে হবে। ফিরিয়ে দিতে হবে মানুষের অধিকার। মুজিব দাড়িয়ে নিল
আসমানের দিকে তাকালেন। আজ আর নীল নেই। রক্ত বর্ণ হয়ে গেছে। তিনি ডাক
দিলেন। মুহূর্তে ভরে গেল চারপাশ। সহস্র মানুষ হাতে হাত রাখলেন । মুজিব
বলেন, " নিজের অধিকার আদায় করতে হবে। হায়নাদের হাত থেকে দেশ মুক্ত করতে
হবে। কাকের দল দেশ থেকে বিতারিত করতে হবে।" সারা দেশে আগুন জলছে। বুকে
আগুন জলছে। বিদ্রোহের আওয়াজ। মুজিব বুঝে গেলেন ঘটনা খারাপ। তিনি
বাঙ্গালিকে বলে গেলেন-"তোমরা প্রস্তুত থাক, আমি ঘোষনা না দিতে পারলেও
তোমরা শত্রুর বুকে ঝাপিয়ে পরবা, হায়নাদের ছাড়ন নাই।"
বাঙ্গালির ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে উঠল। মুজিব স্বাধীনতার ঘোষনা দিলেন ঢাকা
বেতার কেন্দ্র থেকে। যা শুধু ঢাকায় প্রচারিত হল। কিন্তু সারাদেশের
মানুষকে জানাতে হবে। মুজিবের পক্ষে ঘোষনা পত্র লেখা হল। যা কালুরঘাট
বেতার কেন্দ্র থেকে পাঠ করলেন মেজর জিয়াওর রহমান । পুরু বাঙ্গালীর রক্তের
আগুন গুলির বেগে ঝরতে লাগল। বাঙ্গালির বুকের আগুন দেখে পাকিস্তানিদের
মাথায় আগুন ধরে গেল। আগুণ নেভাতে হবে। পানি দিয়ে এ আগুন নেভানো যাবে নাই।
মাথা চাই মুজিবের মাথা। মাথা দিয়ে এ আগুণ নেভাতে হবে। মুজিবকে ধরে নিয়ে
পাকিস্তানে আনা হল। ফাসির রায় হল। কবর খোদা হল। মুজিব দির্থ কন্ঠ বলেন..
" আমার ফাসির রায় হয়েছে। আমার কোন দু:খ নাই। আমি বাঙ্গালি আমি মুসলমান।
মুসলমান একবার মরে বারবার মরে না। মৃত্যুর পরে আমার লাশটা আমার বাঙ্গালির
হাতে তুলি দিয়।
এদিকে বাঙ্গালির আগুন নেভার দিন ঘনিয়ে আসছে। তেজের আগুণে পুরে ছাড়খার
পাকিস্তানি হায়না। মুজিবকে ফিরিয়ে আনা হল বাংলায়।নিজের ভাষা, নিজের দেশ,
নিজের ভুমি, নিজের অধিকার আজ নিজের হাতে।
শান্তি----শান্তি----পরম শান্তি---
শত কষ্টের মাঝে আজ শান্তি
দক্ষিণা বাতাশ, শিমুল গাছ, বটগাছ, তার নিচে আখরা নেড়ে বসে আছে লালন।
মুজিব লালনের পাশে বসলেন. সবুজ বন, যতদুর দৃষ্টি যায় শুধু সবুজ বন, নাদী।
টিয়া পাখির ঝাক উড়ে যায় শিমুল গাছের উপর দিয়ে। দক্ষিনা শীতল বাতাশে গা
ঠান্ডা হয়ে আসে। লালন কলকিতে টান দিয়ে মুজিব কে দিলেন। মুজিব কলকিটা মুখে
নিলেন। একটান আর এক রাশ সাধা ধোয়া। লালন গান ধরলেন
" যেদিন হিন্দু মুসলমান
বৈদ্ধ খৃষ্টান
জাতি গোত্র নাহি রবে
এমন সমাজ
কবেগ সৃজন হবে"
..........
গান থেমে গেল, চোখে পলক পরল। জানালা থেকে হাত ছাড়িয়ে তার সেই চেয়ারে বসলেন।
গ্রামের বাড়ি থেকে চাচা আসছে। মুজিবের সাথে দেখা করতে। মুজিব ব্যাস্ত।
মুজিব সেক্রেটারির হাতে ১০০০ টাকা দিলেন। বললেন ১০০০ টাকা তার চাচাকে
দিতে। তার চাচা হাতে ৫০০ টাকা। আর বাকি টাকা ভ্যানিশ হয়ে গেছে। মুজিব পরে
দেখা করলেন। দেখলেন তার চাচাকে ৫০০ টাকা দেওয়া হয়েছে।
মুজিব কিছুই বললেন না । তিনি ভাবছেন মিরজাফরের কথা ।
" হে বঙ্গমাতা
তুমি দানিয়াছ বাঙ্গালী
মানুষ করনি"।
মুজিব বিশ্বাস করেছিলেন তার বাঙ্গালি মানুষ হয়েছ। অবশেষে আর একটি মেঘের ভার...
হঠাৎ মুজিব তার ডান পাশটায় ব্যাথা অনুভব করলেন। হাত দিয়ে চেপে ধরেন।
হাতের দিকে তাকিয়ে দেখেন রক্ত ঝরছে...
না তিনি কাদেন নি। কেদেছিল ধরনী। চারিদকে মেঘের আস্তরন ক্ষনিকের নিরবাতা।
হিম শিতল। জমে আসে বুক। ধরনী হয়েছে অপার শান্ত। প্রকৃতি থাকেনি থেমে।
প্রকৃতি চলেছে তার আপন খেয়ালে নতুন সূর্যের আলো ছড়িয়ে।
Comments
Post a Comment